গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া - গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল
গর্ভবতী মা মানে একটু বেশি যত্নশীল এবং সেই সঙ্গে একটু বেশি ইবাদতকারী। গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া, গর্ভাবস্থায় বাচ্চা সুরক্ষিত রাখার আমল, গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল, গর্ভের সন্তান ছেলে হওয়ার আমল, সন্তান মেধাবী হওয়ার আমল, গর্ভবতী মায়ের কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয় এই বিষয়গুলো নিয়েই আজকে আলোচনা করব।
গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া, গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল প্রতিটি গর্ভবতীমাই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চান। এ সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে আজকে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করব। এ সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে এই পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া
"মা" শব্দটি ছোট হলেও, এটি প্রত্যেকটি সন্তানের জীবনে একটি অনেক বড় পাওয়া। পৃথিবীতে মায়ের কোন তুলনা হয় না। পৃথিবীতে মাকে যেমন সম্মান করতে এবং তার আদেশ মেনে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে মৃত্যুর পরেও মায়ের সম্মান এবং মর্যাদা অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা বলেন, মায়ের পায়ের নিচেই সন্তানের বেহেস্ত।
গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের যে কষ্ট ও বিপন্ন অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় তার পুরস্কার স্বরূপ প্রদান করা হয়েছে মাতৃত্বের এ মর্যাদা; হিরকখণ্ডের চেয়ে দামি বানানো হয়েছে তাদের। মা সন্তানের জন্য সীমাহীন কষ্ট করেন, তাই তো মহান আল্লাহ তার সঙ্গে সদাচরণ করার কথা খুব জোর দিয়ে বলেছেন।
গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া অনেক রয়েছে। গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সন্তানের মঙ্গলের জন্য। কুরআন ও হাদিসে একটি গর্ভবতী মায়ের সম্পূর্ণ পরিপূর্ণ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, সেগুলো অনুসরণ করলে শুধু কষ্ট সহ্য করতে পারবে এমন নয় বরং এটি এর সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চার আত্মিক তারবিয়াতের প্রতিও গুরুত্ব দেয়া সহজতর হবে।
গর্ভাবস্থায় হযরত মারিয়াম আ. এর মায়ের আমল থেকে শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে। মারিয়ম আঃ এর জন্মের পূর্বে যখন গর্ভধারিণী মাকে সন্তানের ব্যাপারে সুসংবাদ দেয়া হলো, তখন তিনি মহান আল্লাহর নিকট যে দোয়াটি করেছিলেন সেটি সূরা আলে ইমরানের ৩৫ নাম্বার আয়াতে বিদ্যমান।
দোয়াটি হলোঃ রাব্বি হাবলি মিনলাদুনকা জুররিয়াতান তাইয়িবাতান ইন্নাকা সামিউদ্দুয়া, অর্থাৎ হে আমার পালনকর্তা!আপনার পক্ষ থেকে আমাকে পবিত্র সন্তান দান করুন নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী।
নেক নিয়তে পুত্র সন্তান চেয়েও দোয়া করা যায়, দোয়াটি হলো রাব্বি হাবলি মিনাস সালেহিন। অর্থাৎ হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে সৎকর্মশীল পুত্র সন্তান দান করুন।গর্ভাবস্থায় কোনো নারী মারা গেলে সেই নারী শহীদি মর্যাদা লাভ করে থাকে।
গর্ভবতী নারী যখন সন্তান প্রসব করেন তখন তার দুধের প্রতিটি ফোটার বিনিময়ে একটি করে নেকি দেন। এজন্যই গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া এতটা গুরুত্বপূর্ণ ও এতটা ফজিলত।
গর্ভে সন্তান আসা নারীর জন্য বোঝা নয়, বরং সম্মান ও সৌভাগ্যের। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি (সা.)-এর পুত্র ইবরাহিমের দুধমাতা সালামাকে (রা.) নবীজি (সা.) বলেছিলেন, তোমরা নারীরা কি এতে খুশি নও যে, যখন কোনো নারী তার স্বামীর পক্ষ থেকে গর্ভধারিণী হয় আর স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন, তখন সে আল্লাহর জন্য সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারা রাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পেতে থাকবে?
তার যখন প্রসব ব্যথা শুরু হয় তখন তার জন্য নয়ন জুড়ানো কী কী নেয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান-জমিনের কোনো অধিবাসীই জানে না। সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার বিনিময়ে একটি করে নেকি দেওয়া হয়।
একজন সত্যিকার মুসলিম নারী গর্ভধারণের সময়টাকে বিপদ-মুসিবত মনে করে না; বরং এ কষ্ট-যাতনাকে হাসিমুখে বরণ করে নেয়। এ সময়টাতে নারী আল্লাহর বিশেষ রহমতে ডুবে থাকে। এ সময়ের ইবাদত অন্য সময়ের ইবাদতের চেয়ে অনেক দামি ও মূল্যবান। এ জন্য সব সময় আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকা।
নামাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করা। যত বেশি সম্ভব কোরআন তেলাওয়াত করা। সব সময় পবিত্র থাকা। অজু সহকারে থাকা। এগুলো শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তিরও কারণ হবে।
এছাড়াও মা হতে যাওয়া নারীকে ধৈর্য ও অল্পেতুষ্টির পরিচয় দিতে হবে। যেসব খারাপ অভ্যাস মানুষের জীবনকে নিকৃষ্ট বানিয়ে ফেলে যেমন হিংসা-বিদ্বেষ, অহঙ্কার, আত্মগরিমা ও মিথ্যা এসব থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা। অনর্থক অপ্রয়োজনীয় কাজ পরিহার করা।
গর্ভাবস্থায় বাচ্চা সুরক্ষিত রাখার আমল
সন্তান গর্ভে ধারণ করা একজন নারীর জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং পরম সৌভাগ্যের বিষয়। একজন নারী তখনই পূর্ণরূপ পায় যখন সে গর্ভধারণ করে। গর্ভ অবস্থায় একজন নারীর যে কষ্ট ও বিপন্ন অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় তার জন্য ইসলামের মায়ের সম্মান ও মর্যাদা অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
হাদিস শরীফে বলা হয়েছে , হযরত আনাস (রা:) হতে বর্ণিত হজরত মুহাম্মদ (সা) ইরশাদ করেন, “আল জান্নাতু তাহতা আকদামুল উম্মুহাত” মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।”
হাদিস শরীফে আরো বলা হয়েছে , আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত— তিনি বলেন, নবীজি (সা.)-এর পুত্র ইবরাহিমের দুধমাতা সালামাকে (রা.) নবীজি (সা.) বলেছিলেন, তোমরা নারীরা কি এতে খুশি নও যে, যখন কোনো নারী তার স্বামীর পক্ষ থেকে গর্ভধারিণী হয় আর স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন, তখন সে আল্লাহর জন্য সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারা রাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পেতে থাকবে?
তার যখন প্রসব ব্যথা শুরু হয় তখন তার জন্য নয়ন জুড়ানো কী কী নেয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান-জমিনের কোনো অধিবাসীই জানে না। সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার বিনিময়ে একটি করে নেকি দেওয়া হয়।
এ সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে (কান্নাকাটি করে মাকে বিরক্ত করে ঘুমুতে না দেয়) তা হলে সে আল্লাহর জন্য নিখুঁত সত্তরটি গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাবে।’ (তাবরানি, হাদিস : ৬৯০৮; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ৪/৩০৫)
গর্ভ অবস্থায় বাচ্চা সুরক্ষিত রাখতে, আগে আপনাকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। আপনাকে কোন পাপ কাজে জড়িত হওয়া যাবে না। অস্বাস্থ্যকর কোন কাজ করা যাবে না। বাচ্চার সুস্থতার জন্য বেশি রাত জাগা যাবে না। দিনের বেশিরভাগ সময় আপনাকে আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে শামিল থাকতে হবে।
সালাত আদায় করতে হবে, কুরআন তেলাওয়াত করতে হবে, বেশি বেশি জিকির করতে হবে। আপনি যদি আদর্শবান মা হোন তাহলে অবশ্যই আপনার বাচ্চা আদর্শবান হবে। এজন্য আপনাকে আল্লাহর এবাদতের মধ্যে মশগুল থাকতে হবে। এবং নিজের সন্তানের মঙ্গল কামনা করতে হবে।
গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল
সাধারণত গর্ভাবস্থায় ছেলে সন্তান ফর্সা হবে এমন কোন নির্দিষ্ট আমল উল্লেখ করা নেই। তবে হ্যাঁ আপনি নেককার সন্তান চাইতে পারেন এবং নেককার সন্তান এবং সুন্দর সন্তান চাওয়াটা আপনার অধিকার। আল্লাহ তাআলা তার কোরআন এবং নবীজির সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করতে বলেছেন আপনারা যদি সেই সুন্নাহ এবং কোরআন মেনে আমল করেন তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আপনার দোয়া কবুল করবে।
আমরা কোরআনে এবং বিভিন্ন হাদিসে দেখেছি যে সন্তানের জন্য বাবা-মা যে দোয়া করেন সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালন হয়ে যায় তাই আপনার যে সন্তান আপনার গর্ভে আছে সেই সন্তানের জন্য আপনি যখন আমল করবেন এবং দোয়া করবেন আল্লাহ তা’আলা কোনভাবে সেটা ফিরিয়ে দিতে পারবে না।
গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল কিছু আমল রয়েছে সেগুলো কতটা বিশ্বাসযোগ্য এবং শরীয়ত সম্মত তা আমার সঠিকভাবে জানা নেই। এই বিষয়গুলো আমি বিভিন্ন সাইট থেকে পড়ার পরে জানতে পেরেছি। আর সেই বিষয়টি আমি আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করতেছি। আমলগুলো হল-
- প্রথম মাসে সূরা-আল ইমরান পড়লে সন্তান দামী হবে।
- দ্বিতীয় মাসে সূরা-ইউসুফ পড়লে সন্তান সুন্দর হবে।
- তৃতীয় মাসে সূরা মারিয়াম পড়লে সন্তান সহিষ্ণু হবে।
- চতুর্থ মাসে সূরা-লোকমান পড়লে সন্তান বুদ্ধিমান হবে।
- পঞ্চম মাসে সূরা মুহাম্মদ পড়লে সন্তান চরিত্রবান হবে।
- ষষ্ঠ মাসে সূরা ইয়াসিন পড়লে সন্তান জ্ঞানী হবে।
- সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দ্বশম মাসে সূরা-ইউসুফ, মুহাম্মদ এবং ইব্রাহিম কিছু কিছু পড়বে।
ইসলামের অন্যান্য হুকুম মানতে হবে। উদাহরণস্বরূপ- আপনার সন্তান যদি আপনার গর্ভে জানুয়ারি মাসে আসে তাহলে পরবর্তী মাস ফেব্রুয়ারিতে সূরা ইউসুফ বেশি বেশি পাঠ করতে হবে। সারা মাস ধরে আপনি এই সূরা পাঠ করবেন। অবশ্যই পাক পবিত্র অবস্থায় যেকোনো সময়ে যে কোন সংখ্যকবার এই সূরা আপনি আমল করতে পারবেন।
গর্ভের সন্তান ছেলে হওয়ার আমল
সন্তান আল্লাহ তাআলার দেওয়া বিশেষ নেয়ামত। তিনি কাউকে পুত্র সন্তান দান করেন, আবার কাউকে দেন মেয়ে। কাউকে ছেলে-মেয়ে উভয়ই দেন, কাউকে নিঃসন্তান রাখেন। এটি মহান রবের নিজস্ব ফায়সালা। তাঁর ফায়সালার বাইরে মানুষ কিছুই করতে পারে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন, যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন অথবা ছেলে-মেয়ে উভয়ই দান করেন। আবার যাকে ইচ্ছে বন্ধ্যা করেন।’ (সুরা আশ-শুরা: ৫০)
তবে অনেকেই পুত্র সন্তান কামনা করে থাকেন। এজন্য আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করার বিকল্প নেই। হজরত ইবরাহিম (আ.) একসময় নিঃসন্তান ছিলেন। বৃদ্ধ বয়সে তিনি আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করলেন সৎ পুত্র সন্তানের জন্য।
আল্লাহ তাআলা তাঁর দোয়া কবুল করলেন। তাকে নেক পুত্র সন্তান দান করলেন। তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন, رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ ‘রাব্বি হাবলি মিনাস সলেহিন’ অর্থ: ‘হে আমার প্রভু! আমাকে এক সৎপুত্র দান করুন।’ (সুরা সাফফাত: ১০০) পুত্র সন্তান লাভে ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়াটি মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয়।
হজরত জাকারিয়া (আ.) বয়োবৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার পরও নিঃসন্তান ছিলেন। একদিন তিনি দেখলেন, আল্লাহ তাআলা মৌসুম ছাড়াই মরিয়ম (আ.)-কে ফল দান করেছেন। এটা দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়ে আল্লাহ তাআলার কাছে সন্তান লাভের আশায় দোয়া করলেন। সেই দোয়াটি হল-
رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء ‘রাব্বি হাবলি মিল্লাদুনকা যুররিয়্যাতান ত্বাইয়্যিবাহ, ইন্নাকা সামিউদ দুআ’ অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার পক্ষ থেকে আমাকে পূতপবিত্র সন্তান দান করো। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা কবুলকারী।’ (সুরা আলে ইমরান: ৩৮)
উল্লেখ্য, হজরত ইয়াহিয়া (আ.)-ই হলেন জাকারিয়া (আ.)-এর সন্তান। পুত্র সন্তান লাভের জন্য এই দোয়াটিও করা যায়।
নিঃসন্তান দম্পতির উচিত, আল্লাহর ওপর ভরসা করে উল্লিখিত দোয়াগুলো পাঠ করা। মুমিনদের গুণ হলো, তারা আল্লাহ তাআলার কাছে যেকোনো বিষয়ে দোয়া করে থাকেন। আল্লাহর খাঁটি বান্দাদের পরিচয় দিয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, তারা পুণ্যবান স্ত্রী ও সন্তানের জন্য দোয়া করেন-
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا ‘রব্বানা-হাবলানা-মিন্ আয্ওয়াজ্বিনা ওয়া যুররিয়্যা-তিনা-কুর্রতা আ’ইয়ুন, ওয়া জা’আল্না-লিল মুত্তাকিনা ইমামা। অর্থাৎ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর করো এবং আমাদের সংযমীদের আদর্শস্বরূপ করো।’ (সুরা ফোরকান: ৭৪)
সন্তান লাভের জন্য কোরআনে বর্ণিত উল্লেখিত সবকটি দোয়া করা যায়। আল্লাহ তাআলা দোয়া কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। মনে রাখতে হবে, আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে সন্তান কামনা করা যাবে না। সন্তান লাভের জন্য অবৈধ ও অনৈসলামিক উপায়ও অবলম্বন করা যাবে না।
সন্তান মেধাবী হওয়ার আমল
সন্তানকে মেধাবী বানানোর জন্য মায়েরা কি না করে। কত রকমের পুষ্টিকর খাবার দেয়। অনেক নিয়ম কানুনের ভিতরে রাখে। যাতে করে সন্তান কোন খারাপ কাজ না করে। এই জন্য ইসলামে মায়ের মর্যাদা এবং সম্মান অধিক পরিমাণে দেওয়া হয়েছে।
ইসলামের দৃষ্টিতে কিছু দোয়া রয়েছে যে দোয়াগুলো পাঠ করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং সকল কিছু মনে রাখার ক্ষমতা আল্লাহর তরফ থেকে বৃদ্ধি পায়। প্রথম দোয়াটি হল-
উচ্চারণঃ রব্বি জি-দ্বিনি ইলমা। অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আমার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে দিন।
দ্বিতীয় দোয়াটি হল- উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ফাক্কিহহু ফিদ দ্বিন। অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি তাকে দ্বিনের জ্ঞান দান করুন। উপকার- রাসুল (সা.) ইবনে আব্বাস (রা.)-এর জন্য এই দোয়া করেছিলেন। (বুখারি, হাদিস : ১৪৩)
আপনি চাইলে আপনার সন্তানকে মেধাবী করার জন্য এই দোয়াটি পড়তে পারেন, এবং আপনার সন্তানকে প্রথম দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে শিখাবেন। যে যত বেশি এই দোয়া পাঠ করবে আল্লাহ তা'আলা তার তত স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে দিবেন।
গর্ভবতী মায়ের কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়
প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের জানা দরকার গর্ব অবস্থায় কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়। একজন মা যদি ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক তার সন্তান এর মঙ্গলের জন্য আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে মশগুল থাকে তাহলে অবশ্যই তার সন্তান নেক্তার সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করবে। অবশ্যই আপনাকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে।
আর গর্ব অবস্থায় সন্তানের সুরক্ষার জন্য বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। সব রকমের বদ অভ্যাস ছেড়ে দিতে হবে। কোন ধরনের বাজে খাবার খাওয়া যাবেনা যেমন মাদকদ্রব্য। এগুলো বাচ্চার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। গর্ভবতী অবস্থায় অ্যালকোহল জাতীয় কোন খাবার খাবেন না।
চলুন তাহলে জেনে নিই গর্ভবতী মায়ের কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়-
- প্রথম মাসে সূরা-আল ইমরান পড়লে সন্তান দামী হবে।
- দ্বিতীয় মাসে সূরা-ইউসুফ পড়লে সন্তান সুন্দর হবে।
- তৃতীয় মাসে সূরা মারিয়াম পড়লে সন্তান সহিষ্ণু হবে।
- চতুর্থ মাসে সূরা-লোকমান পড়লে সন্তান বুদ্ধিমান হবে।
- পঞ্চম মাসে সূরা মুহাম্মদ পড়লে সন্তান চরিত্রবান হবে।
- ষষ্ঠ মাসে সূরা ইয়াসিন পড়লে সন্তান জ্ঞানী হবে।
- সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দ্বশম মাসে সূরা-ইউসুফ, মুহাম্মদ এবং ইব্রাহিম কিছু কিছু পড়বে।
সূরা লোকমান তিলাওয়াত বা পড়লে আল্লাহ চাইলে গর্ভের সন্তান জ্ঞানী, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও হিকমত সম্পন্ন হবে। সূরা ইনশিক্বাক তিলাওয়াত করলে গর্ভের সন্তান সকল প্রকার ক্ষতি থেকে আল্লাহ চাইলে নিরাপদ থাকবে। সূরা ইউসুফ তিলাওয়াত করলে আল্লাহ পাকের দয়ায়, গর্ভের সন্তানের প্রকাশ্য ও গোপনীয় উভয় দিক সুন্দর হবে।
সূরা আল ইমরান তিলাওয়াত করলে আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তান দ্বীনের পথে চলবে। সূরা মারইয়াম তিলাওয়াত করলে,আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তান ফরহেযগারিতা ও তাক্বওয়া অর্জন করবে। সূরা মুহাম্মাদ তিলাওয়াত করলে আল্লাহ পাকের দয়ায় গর্ভের সন্তান খুবই উত্তম চরিত্রের হবে।
সর্বশেষে বলা যায় যে গর্ভবতী মায়ের সর্বদা আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে। সন্তানকে আদর্শবান সন্তান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তাকে গর্ব অবস্থায় ভালো কাজ করতে হবে অর্থাৎ আল্লাহর ইবাদতে ব্যস্ত থাকতে হবে কোনরকম খারাপ কাজ করা যাবে না। গর্ব অবস্থায় মা যত ভালো কাজ করবে গর্ভের বাচ্চা সেই গুণগুলো পরবর্তীতে পাবে। এইজন্য একজন মাকে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।
SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url