ঘি খাওয়ার ক্ষতি - বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা
ঘি এর উপকারিতা, ঘি খাওয়ার ক্ষতি, খাঁটি ঘি চেনার উপায়, ঘি খাওয়ার উপযুক্ত সময়, বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা, গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। গরু বা মহিষের দুধ থেকে ঘি তৈরি হয়। খাঁটি ঘি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
ঘি খাওয়ার ক্ষতি, বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা এ বিষয়গুলো সম্পর্কে তো আমরা সকলেই জানতে চাই। এ বিষয়গুলো জানা অনেক প্রয়োজন। এ সকল বিষয়ে জানতে আজকের এই পোষ্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ঘি খাওয়ার ক্ষতি - বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা
ঘি এর উপকারিতা
গরু বা মহিষের দুধ থেকে ঘি তৈরি হয়। ঘি এর অনেক উপকারিতা আছে। ঘি সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি খাবার হিসেবে পরিচিত। ঘি তে রয়েছে পুষ্টি উপাদান যা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখে। ঘি তে থাকা চর্বি লিভারকে সুস্থ রাখে। ফলে শরীরও থাকে সুস্থ। ঘি কে মূলত আয়ুর্বেদ ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। স্বাস্থ্য ও বিশেষজ্ঞ থেকে পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা প্রায় ঘি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। গিয়ে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যা আপনি অন্য কিছুতে পাবেন না। ওয়ার্কআউট করলে ঘি খেলে ক্ষতি নেই। তবে যদি একজন ব্যক্তি ব্যায়াম না করেন, হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম না করেন, তাহলে অতিরিক্ত ঘি খেলে হার্টের ধমনীতে সমস্যা হতে পারে।
যেহেতু ঘি অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন, আপনি চাইলে গরমেও এটি খেতে পারেন। চলুন তাহলে ঘি এর উপকারিতা বিস্তারিত ভাবে জানে নেই-
- ক্ষুধা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে।
- গ্যাস্ট্রিকো হজমের সমস্যা দূর করে।
- ঘি হলো প্রদাহ বিরোধী।
- ঘি খেলে মিনারেল ও ফ্যাটি এসিড ভালোভাবে শোষিত হয়।
- বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ফর্মুলেশনে ব্যবহৃত হয় ঘি।
- ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে ঘি। এছাড়া মুখের ঘাসহ যেকোন সমস্যা দূরে রাখে।
- মানসিক চাপ,উদ্বেগ কমিয়ে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- গর্ভকালীন ঘি খাওয়া অনেক উপকারী। তবে চিকিৎসকের সাথে অবশ্যই পরামর্শ করে নিতে হবে।
- ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ঘি একটি চর্বি যুক্ত খাবার। যার ফলে এটি ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আপনি ওজন বাড়াতে চাইলে ঘি খেতে পারেন।
- ক্ষত সারাতে সহায়তা করে। ঘিতে রয়েছে কনজুগেটেড লিনোলেক এসিড দেহের বিভিন্ন ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। এজন্যই গর্ভবতী মায়েদের অপারেশনের পর এটি খাওয়ানো হয়।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ঘিয়ে থাকা মিডিয়াম চেন ফ্যাটি এসিড দেহে এনার্জি বা শক্তি জোগায়। পাশাপাশি এতে থাকা বাইটারিক এসিড হজম শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়াও এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ঘি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং যেকোনো ঋতুতে ঠান্ডা ও ফ্লু থেকে রক্ষা করে। ঘিতে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে এর পাশাপাশি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা প্রদাহ-অ্যালার্জির সমস্যা কমায়।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। ঘি খেলে ব্রেন তীক্ষ্ণ এবং স্মৃতিশক্তি শক্তিশালী হয়। এটি স্মৃতিশক্তি, একাগ্রতা, ফোকাস এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতার মতো ক্ষমতার উন্নতিতে সহায়তা করে।
ঘি খাওয়ার ক্ষতি
দুধের তৈরি এই ঘি সবচেয়ে দামি এবং অভিজাতপূর্ণ খাদ্য হিসেবে গণ্য করা হয়। এটির যেমন অধিক পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতার রয়েছে ঠিক তেমনিভাবে কখনো কখনো এই ঘি কারো জীবনে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। ঘি এর উপকারিতা সম্পর্কে তো আমরা অনেকেই জানি কিন্তু ঘি খাওয়ার ক্ষতি কি হতে পারে সেটা আমরা কয়জনে বা জানি।
চিকিৎসকদের মতে, শীতকাল ঘি খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলেও সারা বছরই ঘি খাওয়া যায়। পরিমাণ মতো খেলে ঘি হয়ে উঠতে পারে সুস্বাস্থ্যের ভিত্তি। ঘি শরীর উষ্ণ রাখতে বেশ কার্যকরী। ঘি একটি পুষ্টিকর প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। এটি সহজে হজমযোগ্য চর্বি যা শরীরের তাপ উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
অনেকের মনে একটা ভুল ধারণা আছে, ঘি স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ হিসেবে তাদের ধারণা হলো ঘি ওজন এবং খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়, যা ঘি সম্পর্কে ভুল ধারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।
কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাড়ের সুস্থতা, পাচনতন্ত্রের উন্নতি, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি এবং স্নায়ুতন্ত্রের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ঘি বেশ উপকারী। পুষ্টিবিদরা বলছেন, নিয়মিত ১ চা চামচ ঘি খাওয়ার অভ্যাসে আপনার সুস্বাস্থ্যের শতভাগ দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতা রাখে ঘি।
তবে এই ঘি কখনও কখনও ক্ষতির কারণ হতে পারে আপনার। যদি সীমিত পরিমাণের বেশি ঘি খাওয়া হয় তবে শরীরে এর উপকারিতা নয় বরং দেখা দেবে এ খাবারের অপকারিতা। বমিভাবের সঙ্গে দেখা দিতে পারে অস্থিরতাও। চলুন জেনে নিই ঘি খাওয়া কাদের জন্য ক্ষতিকর-
- জ্বর হলেঃ আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের মতে, ঘি কফ বাড়াতে কাজ করে। তাই জ্বর হলে ঘি না খাওয়া উত্তম।
- পেটের সমস্যা থাকলেঃ আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা বলছেন, যাদের দীর্ঘস্থায়ী বদহজম বা পেটের সমস্যা আছে তাদের ঘি খাওয়া উচিত নয়।
- গর্ভ অবস্থায়ঃ গর্ভবতীদের প্রথম মাসগুলিতে ঘি খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও, আজকালকার দিনে ঘি খাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।
- হেপাটাইসিসের সমস্যা থাকলেঃ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হলে ঘি খেলে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। কারণ প্রদাহের কারণে লিভার খুব বেশি পরিমাণে হজম করার মতো অবস্থায় থাকে না। সেক্ষেত্রে ঘি খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
- লিভার সিরোসিসের রোগীদেরঃ লিভার সিরোসিস লিভারের একটি রোগ। এটি সুস্থ লিভার টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। ফলে লিভার স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ঘি খাওয়া উচিত নয়।
খাঁটি ঘি চেনার উপায়
প্রায় প্রতিটি বাঙালির রান্না ঘরেই ঘি পাওয়া যায়। এটি সাধে-গন্ধে যেমন অনন্য ঠিক তেমনি এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক। এ কারণেই স্বাস্থ্য সচেতনরা তাদের খাদ্য তালিকায় ঘি রাখেন। অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে, ঘি খেলে ওজন বেড়ে যায়। আসলে এ ধারণা ভুল, বরং ঘি খেলে ওজন কমে দ্রুত। কারণ শরীরে জমায়িত ক্ষতিকর চর্বি দূর করে ঘিয়ে থাকা ভালো চর্বি।
খাঁটি ঘি যেমন শরীরের জন্য উপকারী ঠিক তেমনিভাবে ভেজাল মেশানো ঘি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।এজন্য আপনাকে খাঁটি ঘি চিনে কিনতে হবে। অনেকেই রয়েছি যারা খাটি ঘি এবং ভেজাল মেশানো ঘি এর পার্থক্য বুঝিনা। এজন্য খাঁটি ঘি চেনার উপায় জানা খুবই দরকার।
সাধারণত বাজারে যেসব ঘি পাওয়া যায়, তাতে প্রচুর পরিমাণে ডালডা এবং পামওয়েল থাকে। কিছু কিছু ঘিয়ে এক কেজির মধ্যে ৬০০ গ্রাম ডালডা আর ৩০০ গ্রাম পাম তেল পাওয়া যায়। বাকি মাত্র ১০০ গ্রাম খাঁটি ঘি। এর সঙ্গে অনেক সময়ে এমন রং ব্যবহার করা হয়, যা আদৌ ভোজ্য নয়। ঘিয়ের মধ্যে দানা তৈরি করার জন্যও নানা কিছু মেশানো হয়।
এজন্য আপনাকে খাঁটি ঘি চেনা প্রয়োজন। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নিন খাটি ঘি চেনার উপায়-
- হাতের তালুতে একটু ঘি নিয়ে নিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। শরীরের কাপে যদি দেখেন ঘি গলে যাচ্ছে তাহলে বুঝবেন এটি ঘাঁটি ঘি।
- ভেজাল মেশানো ঘি কখনোই জমে যায় না, তরল থাকে সব সময়। এটি মনে রাখবেন।
- ঘি ফ্রিজে রাখুন, রাখার পর যদি জমে যায় তাহলে নিশ্চিন্ত হবেন যে খাঁটি ঘি।
- চুলায় রেখে গলাতে পারেন। যদি দেখেন ঘি গলতে সময় নিচ্ছে ও হলুদ রং হয়ে যাচ্ছে তবে তা মোটেও খাঁটি নয়।
- একটা পাত্রে গরম পানি নিয়ে তার মধ্যে ঘিয়ের বোতল বসিয়ে দিন। ভেতরের ঘি গলে যাবে। এর পরে ফ্রিজে রেখে দিন। যদি দেখেন গোটা বোতলে একই রঙের জমাট বাঁধা ঘি, তবে সেটি খাঁটি। ঘিতে ভেজাল থাকলে তেলের আলাদা স্তর ফুটে উঠবে।
- অল্প পরিমাণ ঘি গলিয়ে তার মধ্যে দুই ফোঁটা আয়োডিন সলিউশন মিশিয়ে নিন। আয়োডিন যদি বেগুনি রঙ ধারণ করে তাহলে বুঝবেন ঘিয়ে ভেজাল আছে।
মূলত এই উপায় গুলো অবলম্বন করে আপনি খাটি এবং ভেজাল ঘি চিনতে পারবেন খুব সহজেই।ভেজাল ঘি যেহেতু শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর এজন্য অবশ্যই আপনাকে ঘি কেনার সময় সতর্ক হতে হবে। সঠিকভাবে দেখে শুনে খাঁটি ঘি কেনার চেষ্টা করবেন।
ঘি খাওয়ার উপযুক্ত সময়
ঘি নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর। যার কারণে এটি আমরা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকি। গরম ভাতের সঙ্গে খাই, তরকারিতে দিয়ে খাই। আসলে ঘি স্বাদে এবং গন্ধে অতুলনীয়। যার ফলে প্রতিটি বাঙালির কাছেই ঘি একটি প্রিয় খাবার। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ঘি খাওয়ার উপযুক্ত সময় কোনটি।
আসলে ঘি খাওয়ার তেমন কোন সময় নির্ধারিত নাই। আপনি সবসময়ই ঘি খেতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে অনেকেই মনে করেন যে গরমে ঘি খাওয়া যায় না। গরমের ঘি খেলে বেশি গরম লাগে, আরো নানা ধরনের ক্ষতি হয় এ সকল চিন্তা ভাবনা একদম ভুল।
আপনি গরমে এবং শীতে উভয় সময়ে ঘি খেতে পারবেন। তবে খাওয়ার সময় একটু লক্ষ্য রাখবেন যেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত না খেয়ে ফেলেন। প্রয়োজন মোতাবেক ঘি খেলে এটি আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আর আপনারা তো ইতিমধ্যে জেনেই গেছেন ঘি এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। আপনি চেষ্টা করবেন রোজ রোজ অর্থাৎ প্রতিদিন ঘি না খেয়ে একদিন পরপর খাওয়া।
বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা
এতক্ষণ তো ঘি এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনেই গেছেন। এখন মনে প্রশ্ন হচ্ছে বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা কি। বাচ্চাদেরকে কি খাওয়ানো যাবে এমন প্রশ্ন অনেকের মনে জাগে। খাঁটি ঘি বাচ্চা এবং প্রাপ্তবয়স সকলের জন্যই অত্যন্ত উপকারী। তবে বাচ্চাদের জন্য একটু বেশি উপকারিতা হয়েছে।
ভি যেহেতু অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন তাহলে আপনার বাচ্চাকে কেন খাওয়াবেন না। বিয়ের অধিক পরিমাণ পুষ্টিকর ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেই বাচ্চাদের জন্য ঘি এর উপকারিতা-
- হাড়কে শক্তিশালী করতে সহায়তা করেঃ ঘিতে ভিটামিন কে থাকে যা শরীরের ক্যালসিয়াম উৎপাদনে সহায়তা করে, যা শক্তিশালী হাড়ের বিকাশের জন্য অপরিহার্য।
- ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করেঃ ঘি স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ক্যালোরিতে পূর্ণ হয়। মায়ের দুধ খাওয়া বন্ধ করার পরে এটি আপনার শিশুর ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে।
- হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ ঘি একটি ছোট শৃঙ্খলাযুক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড থাক যার নাম বাটয়রিক অ্যাসিড, যা প্রদাহ কমাতে এবং পাচনতন্ত্র উন্নত করতে সহায়তা করে। ঘি এছাড়াও পেটে অ্যাসিড স্রোতকে উদ্দীপনা দেয় যা খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছেঃ ঘিতে ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড়ের জন্য ভাল। এতে ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে রয়েছে যা চোখ, ত্বক এবং উন্নত অনাক্রমতার জন্য ভাল। ঘি ডিএইচএ বা ডোকোসাহেক্সএক্সেনোইক অ্যাসিড রয়েছে, যা চোখ এবং মস্তিষ্কের মধ্যে উপস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত ফ্যাট।
- শুকনো কাশি দূর করেঃ কয়েক চা চামচ ঘি গরম করুন, এতে ৩-৪ টুকরো টুকরো মরিচ কাটুন, হালকাভাবে গরম করুন এবং তাপ থেকে সরিয়ে নিন। সব মরিচকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য জন্য মিশ্রণটি ছেঁকে নিন এবং এই মরিচের নির্যাসযুক্ত ঘি অল্প পরিমাণে শিশুকে খাওয়ান তার শুকনো কাশি নিরাময় করতে।
- থাইরয়েডের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করেঃ ঘিতে আয়োডিন থাকে যা থাইরয়েড গ্রন্থির সঠিক কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য।
- ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়ঃ গবেষণায় দেখা গেছে যে অল্প পরিমাণে ঘি খাওয়ায়, নিয়মিত শরীরের এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে দিতে পারে। এলডিএল কোলেস্টেরল ধমনী ব্লক করা এবং হৃদরোগের জন্য দায়ী।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ ঘি তার অ্যান্টিমাইকোবায়াল বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত এবং এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে, যা সংক্রমণ, কাশি ও ঠান্ডা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- কার্সিনোজেনগুলি সরিয়ে দেয়ঃ গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে মাঝারি পরিমাণে ঘি খাওয়ার ফলে শরীর থেকে কার্সিনোজেন নির্মূল করা যায়, ফলে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।
গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
বিভিন্ন খাবারের স্বাদ ও গন্ধ বাড়াতে ঘি অতুলনীয়। ঘি কেবল তখনই শরীরের ক্ষতি করে যখন তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাওয়া হয়। প্রতিদিন ধোঁয়াওঠা গরম ভাতে এক চামচ ঘি খেলে মিলবে অনেক উপকার। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
- পানির অভাব দূর করেঃ আমাদের শরীরে আর্দ্রতা ধরে রাখতে কাজ করে ঘি। এর ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য শরীরকে ভেতর থেকে আর্দ্র রাখতে কাজ করে। ঘি খেলে ত্বকও ভালো থাকে। ঘিয়ে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট। ঘিয়ের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- শরীর ঠান্ডা রাখেঃ ঘি খেলে আমাদের মন এবং শরীরে এক ধরনের শীতলতা আসে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঘি প্রদাহ হ্রাস করে। সেইসঙ্গে এটি শরীরকে শিথিল রাখতে কাজ করে। ঘি মিষ্টি এবং শীতল প্রকৃতির। ফলে গরমেও ঘি খাওয়া যায়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করার বিকল্প নেই। গরম ভাতে ঘি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। ঘি খেলে নানা ধরনের সংক্রমণ ও অসুখ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
- হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ ঘি খেলে তা ভালো হজমে সাহায্য করে। হজমে উন্নতি এবং পুষ্টির মান শোষণে কাজ করে ঘি। এতে থাকে প্রচুর বিউটারিক এসিড যা ইন্টেস্টাইনর কার্যক্ষমতা বাড়ায়। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের সঙ্গে ঘি মিশিয়ে খেলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সামান্য হলেও কমে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও উপকারী।
- শক্তি বৃদ্ধি করেঃ শরীরে শক্তি বাড়াতে চাইলে প্রতিদিন ঘি আপনি খেতেই পারেন। কারণ এটি শরীরে পুষ্টি পৌঁছে দেয়। গরম ভাতের সঙ্গে এক চামচ ঘি খেতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘিয়ে ফ্যাটের পরিমাণ যথেষ্ট বেশি।
সবশেষে বলা যায় যে ঘি অত্যন্ত উপকারী একটি খাদ্য। এর পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা অনেক। এজন্য ঘি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং আপনার খাদ্য তালিকায় ঘি অবশ্যই রাখবেন। আপনারা তো উপরে জেনে গেছেন ঘি এর উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে এবং সেই সঙ্গে এটাও জেনে গেছেন যে ঘি এর ক্ষতিকর দিক।
SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url