ব্লু কার্ড চশমার উপকারিতা - চোখের জন্য কোন লেন্স ভালো

ব্লু কার্ড চশমার উপকারিতা, চোখের জন্য কোন লেন্স ভালো, চখের যত্নে ঘরোয়া উপাই কি, চশমা ব্যাবহার করা উচিত নাকি লেন্স,পড়াশোনার জন্য চশমার কোন গ্লাস ব্যাবহার করা উচিত এ সকল বিষয় হলো আজকের এই প্রতিবেদনের বিষয়। আপনি এগুলো সম্পর্কে জানতে এসেছেন তার মানে আপনি একজন সচেতন ব্যক্তি। 

ব্লু কার্ড চশমার উপকারিতা - চোখের জন্য কোন লেন্স ভালো

ব্লু কার্ড চশমার উপকারিতা, চোখের জন্য কোন লেন্স ভালো এই বিষয়গুলো সম্পর্কে একজন সচেতন ব্যক্তিই জানতে আগ্রহী হন। আজকের এই পোস্টটি যদি আপনি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনি অবশ্যই এই সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।

    ব্লু কার্ড চশমার উপকারিতা

    ব্লু কার্ড চশমার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে আমাদেরকে প্রথমে ব্লু লাইট বানিয়ে আলো সম্পর্কে জানতে হবে। আমরা যে আলো দেখি অর্থাৎ দৃশ্যমান আলোতে রংধনুর সাতটা রংই থাকে।এদের মধ্যে লাল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি আর বেগুনি ওয়ালা তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম।

    আর যে আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য যত কম তার শক্তি তত বেশি। সে হিসেবে বেগুনি আলোর শক্তি সবচেয়ে বেশি, আর লাল আলোর শক্তি সবচেয়ে কম। বেশি শক্তির কারণে এই বেগুনি বা নীল রঙের আলোকে HEV লাইট বলা হয়।

    এসব HEV আলোগুলোর রয়েছে ক্ষতিকর প্রভাব । এদের মধ্যে নীল আলো আমাদের শরীরের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলোর যে ২৪ ঘণ্টার একটা শরীরচক্র Circadian Rhythm আছে সেটার ব্যাঘাত ঘটায়। শুধু তাই নয়, এর কারণে সাধারণ চক্ষু অবসাদ বা Eye Strain থেকে শুরু করে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে পারে।

    ব্লু কার্ড চশমা হলো এমন চশমা যা চোখের জ্বালা থেকে নীল আলো রোধ করতে পারে। বিশেষ ব্লু কার্ড গ্লাসগুলি অতি বেগুনি রশ্মি এবং বিকিরণকে কার্যকর ভাবে আলাদা করতে পারে এবং কম্পিউটার বা টিভি ফোন দেখার সময় ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নীল আলোকে ফিল্টার করতে পারে।

    ব্লু কার্ড গ্লাসের প্রযুক্তি চোখের নীল আলোর ক্ষতিকর অংশকে কার্যকর ভাবে ব্লক করতে পারে। ইলেকট্রিক স্ক্রিনের দীর্ঘ সময় তাকিয়ে থাকার কারণে চাক্ষুষ ক্লান্তি দূর করতে পারে, এবং অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ এবং ক্ষতি কমাতে পারে। তবে চোখের সুরক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো উন্নয়ন।

    চোখ ব্যবহারের ভালো অভ্যাস গড়ে তুলুন, কখনো একটা না অনেকক্ষণ সময় টিভি বা কম্পিউটারের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকবেন না। মাঝে মাঝে চোখ বন্ধ করে নিজের চোখকে বিশ্রাম দিন। চোখে কম দেখা বাচক নষ্ট হওয়ার জন্য আমাদের বদ অভ্যাসই দায়ী। এজন্য চোখ সুস্থ রাখার জন্য ভালো অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

    চোখের জন্য কোন লেন্স ভালো

    চোখে ব্যবহার করা লেন্সের বেশিরভাগই (প্রায় ৭০ শতাংশ) জলীয় পদার্থ। বাকি ৩০ শতাংশ প্রোটিন এবং লবণ জাতীয় পদার্থ। স্বাভাবিক অবস্থায় লেন্স পরিষ্কার ও স্বচ্ছ থাকে। কোন বস্তু থেকে যখন আলো এসে চোখে পড়ে, তখন সে আলো চোখের একেবারে সামনের স্বচ্ছ ক্নিয়ার ভেতর দিয়ে চোখের মধ্যে প্রবেশ করে।

    এরপর স্বচ্ছ লেন্সের ভেতর দিয়ে আলো চলে যায় চোখের পেছনে রেটিনায়। রেটিনায় বস্তুটির একটি ছবি বা প্রতিবিম্ব তৈরি হয়। আর সেই বার্তা বৈদ্যুতিক স্পন্দনের আকারে যখন মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছায় তখনই বস্তুটি স্পষ্ট দেখা যায়। চোখের কর্নিয়া আর লেন্স রেটিনার ওপর আলোর ফোকাস করে ছবি তৈরি করে।

    লেন্সটি যদি স্বচ্ছ হয় তাহলে সহজেই এর ভেতর দিয়ে আলো গিয়ে রেটিনায় পড়তে পারে। কোন কারনে লেন্স ঘোলাটে বা মেঘাচ্ছন্ন এর মত হলে অর্থাৎ তার স্বচ্ছতা কমে গেলে ভেতর দিয়ে বেশি আলো প্রবেশ করতে পারে না। তখন রেটিনা ছবি স্পষ্ট হয় না। যদি আলো কোন ভাবে পৌঁছাতে না পড়ে তাহলে রেটিনায় কোন ছবিও তৈরি হয় না। সেই সময় মানুষ কোন কিছু দেখতে পায় না।

    বর্তমান সময়ে চোখের জন্য Refractive lol (রিফেকটিভ লোল) লেন্স ভালো। এ লেন্সের দুইটি পাওয়ার রয়েছে একটি হল দূরে এবং আরেকটি হল কাছে। মূলত একেক ধরনের মানুষের চোখের কন্ডিশন অনুযায়ী একেক ধরনের লেন্স লাগানো হয়।

    চোখের পাওয়ার এবং পরিমাপের ওপর একটা কাজ নির্ভর করে লেন্স বসানো হয়। বর্তমানে বিশ্বে নানা ধরনের এবং নানা কাজের লেন্স পাওয়া যায়। চোখের পরীক্ষা করে এবং চোখে কি লেন্স প্রয়োজন সে দিক বিবেচনা করে একজন ডাক্তার চোখের লেন্স দিয়ে থাকেন। এবং এই লেন্স অবশ্যই তার চোখের জন্য ভালো হবে।

    চখের যত্নে ঘরোয়া উপাই কি

    প্রত্যেক মানুষের শরীরের সবথেকে স্পর্শকাতর বা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো চোখ। এজন্য চোখের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। অনেকে রয়েছে যারা কাজের প্রয়োজনে দিনের বেশিরভাগ সময়টা কম্পিউটার বা ফোনের স্ক্রিনে কাটাতে হয়। এছাড়াও মানসিক চাপ ও ঘুম ঠিকমতো না হওয়ার কারণে চোখের নানা রকমের সমস্যা হয়।

    আজকে আমরা জানবো কিভাবে এই সমস্যা দূর করা যায় এবং চোখের যত্নে ঘরোয়া উপায় কি সে বিষয়ে জানব। আপনি যদি আমাদের টিপস ফলো করেন তাহলে আপনার চোখের সমস্যা ৮০% দূর হবে। চলুন তাহলে জেনে নেই চোখের যত্নে ঘরোয়া উপায় কি-

    টমেটোঃ টমেটো চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সহায়তা করে এবং এটি অনেক কার্যকরী। দুই চামচ টমেটোর রস, দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিবেন। এরপর এটি চোখের নিচে লাগাবেন, ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি আপনি দিনে দুইবার করতে পারেন।

    কাঁচা আলুঃ কাঁচা আলু ঠান্ডা করে, ব্লেন্ডারে দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিবেন। এরপর আপনার চোখের নিচে পড়ে থাকা দাগের ওপর বা যেখানে দাগ রয়েছে সেখানে ১০ থেকে ১৫ মিনিট দিয়ে রাখুন, এর পরে এটিকে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইদিন করতে পারেন, তাহলে অনেক ভালো ফল পাবেন।

    গোলাপজলঃ ছোট পরিষ্কার কাপড়র টুকরা বা আড়াই প্যাড গোলাপ জলে ভিজিয়ে রাখুন কয়েক মিনিট। কাপড় পুরোটা ভিজে গেলে চোখ বন্ধ করে চোখের পাতার ওপর রেখে দিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। আপনি যদি এটি ১০ থেকে ১৫ দিন দিনে একবার করে করেন তাহলে আপনার চোখের স্বাভাবিক রং ফেরত পাবেন।

    শসাঃ সতেজ শসা চিকন করে কেটে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করতে হবে। এরপর চোখ বন্ধ করে নিয়ে চোখের ওপর এটি ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর ধুয়ে ফেলতে হবে। দিনে অন্তত দুইবার একটানা সাত দিন ব্যবহার করতে হবে। তাহলে আপনি আপনার চোখের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পাবেন।

    আপনি যদি আপনার চোখকে সুন্দর এবং দৃষ্টি আকর্ষণ রাখতে চান তাহলে আপনি আমাদের এই টিপস অবলম্বন করতে পারেন। এতে করে আপনার চোখ আরো সুন্দর হবে। আর আপনার চোখে জ্বালাপোড়া কম হবে। আপনি চোখে তেমন কোন সমস্যা ফিল করবেন না।

    চশমা ব্যাবহার করা উচিত নাকি লেন্স

    দীর্ঘক্ষণ সময় কম্পিউটার স্কিনের চোখ রাখায় চোখের দৃষ্টি শক্তি কমে যাচ্ছে। তার সঙ্গে প্রাকৃতিক দূষণ, এনার্জি রয়েছে। বর্তমান সময়ে কম বয়সীদের চোখের সমস্যা বেশি হয়। হাইপারমেট্রোপিয়া, মাইওপিয়ার মতো একাধিক চোখের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। চোখের সমস্যার কারণে আবার অনেক ছোট বয়স থেকে চশমা পরতে হয়।

    আবার অনেকে রয়েছি যারা লেন্স ব্যবহার করি। চশমা লোক নষ্ট করে দেয় এই ভেবেও অনেকে লেন্স বেছে নেন। যদিও চশমা ও লেন্স দুটোই ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিজের সুবিধা রয়েছে। কিন্তু আপনি নিজের জন্য কোনটা বেছে নিবেন, চশমা নাকি লেন্স। এই নিয়ে মনে প্রশ্ন থেকেই যায়।

    লেন্স অনেক ধরনের হয়। যেমন ডেইলি ওয়ার লেন্স, সফট কনট‌্যাক্ট লেন্স, ডিসপোজেবল কনট‌্যাক্ট লেন্স, আরজিপি কনট‌্যাক্ট লেন্স প্রভৃতি। হার্ড লেন্স মূলত ক্লিনিক‌্যাল কন্ডিশনে ব‌্যবহার করা হয়, তবে বেশি মানুষ সফট লেন্সই পরেন। লেন্স কি চশমার বিকল্প হতে পারে? বিশেষজ্ঞদের মতে একেবারে না।

    সাধারণত চোখের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য আজকাল লেন্সের প্রতি মানুষের ঝোক একটু বেড়েছে। খেলোয়ার কিংবা বিনোদন জগতের মানুষেরা লেন্স সব থেকে বেশি ব্যবহার করতে বাধ্য হন। তাছাড়া চোখে হাই পাওয়ার থাকলে কিছুক্ষণের জন্য ধরা যাক কোন অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন তখন লেন্স পড়তে পারেন।

    এছাড়াও যাদের চোখে প্লাস পাওয়ার তাদের লেন্স না পড়াই ভালো। এর কারণ হলো লেন্স পড়ার ফলে সামনের জিনিস দেখতে আরও অসুবিধা হবে। কিন্তু যাদের মাইনাস পাওয়ার এবং খুব বেশি পাওয়ার তাদেরকে লেন্স পড়তে বলেন ডাক্তাররা। কারণ ভারি মোটা চশমা অনেকক্ষণ পড়ে থাকলে ব্যথা হয়ে যায়। তাই কিছু সময়ের জন্য লেন্স পড়লে তাদের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। কিন্তু সর্বক্ষণের জন্য লেন্স পড়ে থাকা যাবে না।

    তবে কম পাওয়ারের চোখে চশমাই উপযুক্ত। এখন আপনি নিজেই বিবেচনা করে দেখবেন যে আপনার জন্য কোনটি ভাল হয়। লেন্স ব্যবহার করা নাকি চশমা ব্যবহার করা। তবে আমি সাজেস্ট করব যে আপনি সর্বদা লেন্স ব্যবহার করবেন না। কোন বিশেষ সময়ে বা অনুষ্ঠানে লেন্স ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া লেন্স ব্যবহার না করাই উত্তম, আমার মতে।

    পড়াশোনার জন্য চশমার কোন গ্লাস ব্যাবহার করা উচিত

    যদিও কোন কম্পানির গ্লাস ব্যবহার করছেন তা জানা নেই। সাধারণ থেকে ভালো র মধ্যে কোডাক, এসিলোরের ক্রিজাল আছে, যদি আপনি আরো দামী কিনতে চান তাহলে শফির কিনতে পারেন। তবে যেই লেন্স আপনি ক্রিজালে ৫-৭ হাজারে পাবেন, সমান লেন্স শফিরে ৪৫-৫০ হাজারে পাবেন।

    তবে এইক্ষেত্রে আবারও বলবো যে কোডাক লেন্সও কোনো অংশে কম নয় ও আলো এমন কিছু আটকায় না যে অস্বস্তিকর হবে।বেশী অসুবিধা হলে আপনি চোখের ডাক্তারের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন।

    আজকাল লাইটিং সংক্রান্তে পারপাস লাইটিং করা হয়। উদ্দেশ্যমুলক লাইটিং। তাতে একটি ঘরে আলো বিভিন্ন যায়গায় বিভিন্ন রকমের লাগানো হয়। তাতে ব্যবহারের হিসাবে উপযোগী বিভিন্ন আলো জালানো হয়, এবং এতে সাশ্রয়ও হয়।

    পড়ার সময় আলো নিজের মাথার পেছন থেকে ও বাম দিক দিয়ে রাখতে পারলে, সব থেকে ভালো এবং যাতে আলো আপনার বই খাতার উপর সরাসরি পড়ে। তেমনটা সম্ভব হলে, ব্যবস্থা করে দেখতে পারেন। পড়ার আলো যদি এডাজেস্টবেল লুমেন এর হয় তাহলে সব থেকে ভালো। তাহলে আপনি নিজেই এডজাস্ট করে দেখতে পারেন যে ঠিক কতটা আলো আপনার জন্য একদম সঠিক।

    আজকাল সাধারনত সবাই LED লাইট ব্যবহার করেন। এর একটি K factor থাকে Kelvin temperature scale। এই K সংখ্যাটা যত কম হবে আলো তত হলদেটে ধরনের হবে, আর যতো বেশী K সংখ্যা হবে, তত বেশী আলো সাদার দিকে হবে।

    লেখা পড়া করার জন্য মানুষ ৪০০০K/৫০০০K থেকে ৬৫০০K র মধ্যে সুবিধা বোধ করে। আবার অনেক সময় একই মানুষ আলাদা মানসিক পরিস্থিতিতে আলাদা K পছন্দ করে। মোটামুটি ৪৫০ লুমেন আপনি ৬-৯ ওয়াটে পাবেন। তবে তাতে লাইট ডিফিউজার থাকতে হবে। এই ভাবেও আপনি জাচাই করে দেখে নিতে পারেন।

    সর্বশেষে বলা যায় যে, লেন্স ব্যবহার করার থেকে চশমা ব্যবহার করা অনেক উত্তম। লেন্স ব্যবহার করা হয় সৌন্দর্যের জন্য। তবে আপনি বিশেষ অনুষ্ঠানে বা সময়ে লেন্স ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া আপনি যদি সার্বক্ষণিক লেন্স ব্যবহার করেন তাহলে সেটি আপনার জন্য কখনোই ভালো ফল স্বরূপ হবে না। এর জন্য একটু কষ্ট হলেও চেষ্টা করবেন চশমা ব্যবহার করা।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url