হস্তমৈথুনের পর কি নামাজ হবে - হস্তমৈথুন কি কবিরা গুনাহ
ইসলামী শরীয়তে দৃষ্টিতে হস্তমৈথুন একটি নিকৃষ্ট এবং ঘৃণিত কাজ। অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন হস্তমৈথুনের পর কি নামাজ হবে? এ বিষয়ে জানতে হলে আপনাকে প্রথমে জানতে হবে হস্তমৈথুন করা হারাম নাকি হালাল। কেননা ইসলাম কখনো হারাম কাজকে সম্মতি দেয় না। আবার জানা উচিত হস্তমৈথুন কি কবিরা গুনাহ।
আজকের এই পোস্টে ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে হস্তমৈথুন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। মেয়েদের হস্ত বেতনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ইসলাম কি বলে সেই বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হবে। হস্তমৈথুন সম্পর্কে ইসলাম কি বলে সে বিষয় সম্পর্কে জানতে পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
হস্ত মৈথুন কি কবিরা গুনাহ
হস্তমৈথুনের গুনাহ সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমে আপনাকে জানতে হবে, এটি ইসলামিক শরীয়তে হারাম নাকি হালাল। হারাম অর্থ নিষিদ্ধ, আর হলো সেসব বিষয় যার ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে। আর হারাম কাজগুলো করাই মূলত কবিরা গুনা। হস্তমৈথুনের গুনাহ সম্পর্কে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ডঃ বিভিন্ন মতামত পোষণ করেছেন।
হস্তমৈথুনের ব্যাপারে ডক্টর আবু আমেনা বিলাল ফিলিপ্স বলেছেন- "হস্তমৈথুন হারাম বলার পক্ষে কুরআন ও হাদিসে কোন দলিল নেই। আমি একে হারাম বলতে পারি না।"
এছাড়াও বিশেষজ্ঞ ইসলামী বিদ ডক্টর জাকির নায়েক বলেছেন- যদি হস্তমৈথুনের বিষয়ে কথা বলতে হয়, ইসলামের এ ব্যাপারে সরাসরি কোন আয়াত বা দলিল নেই। বিভিন্ন আলেমের মত রয়েছে, এ নিয়ে কুরআন হাদিসে নিশ্চিতভাবে সরাসরি কিছু বলা নেই। এ ব্যাপারে সরাসরি কোন আয়াত উল্লেখ নেই।
হস্তমৈথুনের ব্যাপারে দুটি গ্রুপ রয়েছে। বেশিরভাগ স্কলারের বা ইসলাম বিশেষজ্ঞদের মতে এটা পাপ।কিছুই স্কলারের মতে, যদি এটা যৌন অপরাধ থেকে দূরে রাখে সে ক্ষেত্রে এটা হালাল। এক্ষেত্রে মত পার্থক্য রয়েছে।
যে ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশ নিয়ে আর নিষেধ নেই সেটাকে ইসলাম বলে মুবাহ। মুবাহ মানে ব্যক্তির ইচ্ছাধীন। আপনি যদি হস্তমৈথুন করার ফলে হারাম কাজ থেকে বিরত থাকেন অর্থাৎ আপনি যদি জেনা থেকে বিরত থাকেন তাহলে এটি আপনার জন্য হালাল হবে। আর আপনি যদি হস্তমৈথুনের সঙ্গে পর্ন ভিডিও কে জড়িয়ে ফেলেন তাহলে সেটি আপনার জন্য হারাম হবে।
ইসলামে যেহেতু হস্তমৈথুনকে মুবাহ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তাই এই বিষয়টি সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভরশীল। এর বিরুদ্ধে বড় জোর যদি কিছু বলা যায় তাহলো- এ কাজ উন্নত নৈতিক বৃত্তির বিরুদ্ধে আহবার কারণে এটি একটি মাকরুহ ও অপছন্দনীয় কাজ। এই অভিমতের সমর্থকরা এ যুক্তি পেশ করেন যে হাদিস ও কুরআনে কোথাও এ কাজটিকে হারাম বলে উল্লেখ করা হয়নি।
হস্ত মৈথুনের পর কি নামাজ হবে
ঘুমের মধ্যে শরীর উত্তেজিত হয়ে বীর্য বের হওয়ার পর বা জাগা অবস্থায় হস্তমৈথুন করার পর গোসল করে পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত নামাজ হবে না। তাই যদি হস্তমৈথুন করার পর নামাজ পড়তে হয় তাহলে আপনাকে প্রথমে অবশ্যই গোসল করে পরিষ্কার হতে হবে।
হস্তমৈথুনের ব্যাপারে দুই রকম মতবিরোধী রয়েছে, আর ইসলামের এটিকে মুবাহ হিসেবে বিবেচিত করা হয়। যার কারণে অনেকে এই কাজ মানে হস্তমৈথুন করে থাকেন। তাই মনে জিজ্ঞাসা হস্তমৈথনের পরে নামাজ হয় কিনা, হস্তমৈথুন করার পর গোসল করে পরিষ্কার না হওয়া অব্দি নামাজ বা কোন ইবাদত হবে না।
ইসলাম হস্তমৈথুন সর্ম্পকে কি বলে
ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে হস্তমৈথুন কে মুবাহ হিসাবে বিবেচিত করা হয়। মুবাহ- এর অর্থ হচ্ছে ইচ্ছাধীন। আপনি যদি ইচ্ছা করেন যে হস্তমৈথুন করবো তাহলে করতে পারবেন, তবে এক্ষেত্রে কোন রকম পর্ন ভিডিওর সঙ্গে নিজেকে জড়ানো যাবে না।
আপনার যদি মনে হয় যে আপনি জিনায় লিপ্ত হতে পারেন, সে ক্ষেত্রে হস্তমৈথুন করা আপনার জন্য হালাল হবে, তবে কোন পর্ন ভিডিওর সাহায্য নেওয়া যাবে না। তাহলে সেটি আপনার জন্য হারাম হয়ে যাবে। আর ইসলাম কখনো হারাম কাজকে সম্বোধন করে না।
হস্তমৈথুনের ব্যাপারে ডক্টর আবু আমেনা বিলাল ফিলিপ্স বলেছেন- "হস্তমৈথুন হারাম বলার পক্ষে কুরআন ও হাদিসে কোন দলিল নেই। আমি একে হারাম বলতে পারি না।"
এছাড়াও বিশেষজ্ঞ ইসলামী বিদ ডক্টর জাকির নায়েক বলেছেন- যদি হস্তমৈথুনের বিষয়ে কথা বলতে হয়, ইসলামের এ ব্যাপারে সরাসরি কোন আয়াত বা দলিল নেই। বিভিন্ন আলেমের মত রয়েছে, এ নিয়ে কুরআন হাদিসে নিশ্চিতভাবে সরাসরি কিছু বলা নেই। এ ব্যাপারে সরাসরি কোন আয়াত উল্লেখ নেই।
হস্তমৈথুনের ব্যাপারে দুটি গ্রুপ রয়েছে। বেশিরভাগ স্কলারের বা ইসলাম বিশেষজ্ঞদের মতে এটা পাপ।কিছুই স্কলারের মতে, যদি এটা যৌন অপরাধ থেকে দূরে রাখে সে ক্ষেত্রে এটা হালাল। এক্ষেত্রে মত পার্থক্য রয়েছে।
ইসলামে যেহেতু হস্তমৈথুনকে মুবাহ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তাই এই বিষয়টি সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভরশীল। এর বিরুদ্ধে বড় জোর যদি কিছু বলা যায় তাহলো- এ কাজ উন্নত নৈতিক বৃত্তির বিরুদ্ধে আহবার কারণে এটি একটি মাকরুহ ও অপছন্দনীয় কাজ। এই অভিমতের সমর্থকরা এ যুক্তি পেশ করেন যে হাদিস ও কুরআনে কোথাও এ কাজটিকে হারাম বলে উল্লেখ করা হয়নি।
রমজানে সহবাস ও হস্তমৈথুন সংক্রান্ত বিধান
রমজান মাসে রোজা রেখে দিনের বেলা যেমন পানাহার করা যায় না, তেমনি একইভাবে স্ত্রী সহবাসও নিষেধ। রোজা রাখা বা সিয়াম পালনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এই সব কিছু থেকে বিরত থাকা। তবে সূর্য ডোবার পর থেকে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা করা জায়েজ।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন- সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। (সূরা বাকারা-১৮৭)
তবে দিনের বেলা রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত সহবাস করলে কাজা ও কাফফারা দেওয়া উভয়টি ওয়াজিব হবে। এছাড়াও স্ত্রীকে চুমু দেওয়া কিংবা স্ত্রীর সঙ্গে আনন্দ সুলভ আচরণ করার কারণে বীর্যপাত হয়ে, রোজা ভেঙ্গে গেলেও শুধু কাযা ওয়াজিব হবে, এক্ষেত্রে কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
আর যদি স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মুসাফির হন এবং রোজাদার না হন, তবে সহবাসের কারণে তাদের কোনো গুনাহ হবে না, তাদের উপর কোনো কাফফারাও ওয়াজিব হবে না এবং দিনের বাকি অংশ পানাহার ও যৌনমিলন থেকে বিরত থাকাও ওয়াজিব হবে না। শুধু তাদের উভয়কে ওই দিনের রোজা কাজা করলেই হবে। যেহেতু মুসাফির অবস্থায় রোজা পালন করা, তাদের জন্য বাধ্যতামূলক হয় না।
আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন- "আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না।" (সুরা বাকারা- ১৮৫)
আবার, কেউ যদি রোজার দিন ইচ্ছাকৃতভাবে হস্তমৈথুন করে এবং বীর্য বের হয়, এতে তার রোজা ভেঙ্গে যাবে। যদি এ রোজাটি ফরজ রোজা হয়ে থাকে, তাহলে তাকে এ রোজা কাজা করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে। কারণ রোজা রাখা বা রোজা না-রাখা কোনো অবস্থাতেই হস্তমৈথুন করা জায়েজ নয়। (ফতোয়া বিন বায- ১৫/২৬৭)
এ প্রসঙ্গে শাইখ ইবনে উসাইমিন বলেন, ‘যদি রোজাদার ব্যক্তি হস্তমৈথুন করে এবং বীর্যপাত হয়, তাহলে তার রোজা ভেঙ্গে যাবে। যেদিন হস্তমৈথুন করেছে, তাকে সেদিনের রোজা কাজা করতে হবে। তবে, তাকে কাফফারা দিতে হবে না। কারণ কাফফারা শুধু সহবাসের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করলে সেক্ষেত্রে ফরজ হয়। কিন্তু তাকে তার কৃতপাপের জন্য তওবা করতে হবে।’(ফতোয়া আরকানুল ইসলাম, পৃষ্ঠা-৪৭৮) [ সংগৃহীত]
মেয়েদের হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ইসলাম
হস্তমৈথুনের কারণে নারী বা মেয়েদের শারীরিক বা মানসিক বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়। সেই সাথে ইসলাম কখনোই এটাকে সম্মতি দেয় না। হস্তমৈথুন করা খুবই ঘৃণিত একটি কাজ তাই এর থেকে দূরে থাকা উত্তম। চলুন জেনে নিয়ে মেয়েদের হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব গুলো-
হস্তমৈথুন করার ফলে মেয়েদের মানসিক যে ক্ষতিগুলো হয় তাহলে-
- উদ্বেগ
- হতাশা
- লজ্জা
- অপরাধবোধ
- যৌন সমস্যা
- আত্মবিশ্বাসের অভাব
আবার হস্তমৈথুন করার ফলে মেয়েদের শারীরিক যে ক্ষতিগুলো হয় তাহলে-
- বীর্য স্বল্পতা
- যৌনাঙ্গে ঘা
- যৌনাঙ্গে চুলকানি
- প্রটেস্ট ক্যান্সার
- মূত্রনালীর সংক্রমণ
- প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস
- স্পার্ম এর গুণগতমান হ্রাস
ইসলাম স্বাভাবিকভাবেই এই ঘৃণিত কাজকে সম্মতি দেয় না। তাই এই কাজ থেকে সর্বদা দূরে থাকতে হবে। হস্তমৈথুন থেকে দূরে থাকার জন্য আপনি বিভিন্ন উপায় গ্রহণ করতে পারেন। ইসলামে হস্তমৈথুন থেকে বিরত থাকার জন্য বিভিন্ন উপায় এর কথা বলা হয়েছে। যেমন- বিবাহ করা, রোজা রাখা, তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা, নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করা।
বীর্যপাত না করে হস্তমৈথুনের কারণে কি রোজা ভঙ্গ হবে
বীর্যপাত না করে হস্তমৈথুনের কারণে রোজা ভঙ্গ হবে না, তবে এটি একটি ঘৃণিত কাজ না করাটাই উত্তম। তবে যদি আপনি অধিক উত্তেজিত হন এবং আপনার দ্বারা যদি জেনা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে আপনি করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে রোজা না রাখা অবস্থায় এটা প্রযোজ্য।
এ প্রসঙ্গে শাইখ ইবনে উসাইমিন বলেন, ‘যদি রোজাদার ব্যক্তি হস্তমৈথুন করে এবং বীর্যপাত হয়, তাহলে তার রোজা ভেঙ্গে যাবে। যেদিন হস্তমৈথুন করেছে, তাকে সেদিনের রোজা কাজা করতে হবে। তবে, তাকে কাফফারা দিতে হবে না। কারণ কাফফারা শুধু সহবাসের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করলে সেক্ষেত্রে ফরজ হয়। কিন্তু তাকে তার কৃতপাপের জন্য তওবা করতে হবে।’(ফতোয়া আরকানুল ইসলাম, পৃষ্ঠা-৪৭৮)
SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url