মাইগ্রেনের লক্ষণ - মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায়

বর্তমান সময়ে এসে আমরা কমবেশি সকলেই মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগে থাকি। মাইগ্রেনের সমস্যা ভোগার একমাত্র কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করা এবং সবকিছুতে অনিয়ম করা। আবার আমরা অনেকেই একটু মাথা ব্যথা হওয়াতেই মনে করি যে এটি বুঝিয়ে মাইগ্রেনের সমস্যা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নাও হতে পারে তাই মাইগ্রেনের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। 

মাইগ্রেনের লক্ষণ - মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায়

এছাড়াও জানতে হবে মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায়। মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায় জানার পাশাপাশি মাইগ্রেনের ব্যথা কেন হয় সে সম্পর্কেও আমরা আজকে জানবো। এছাড়াও মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর জন্য কি ধরনের চিকিৎসা নিতে হবে সে সম্পর্কেও জানতে হবে। তাই এই সকল বিষয়গুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আজকের এই পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সূচিপত্র

মাইগ্রেন কি

মাইগ্রেন একটি বিশ্ব জনীন সমস্যা এটি একটি বহু পুরানো একটি সমস্যা। সারা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের এই একই সমস্যায় ভুগে। মাইগ্রেনের সমস্যার বিভিন্ন ধরনের সমস্যার লক্ষ্য করা যায়। যেমন- মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি, পেট ব্যথা। সাধারণত মাইগ্রেন রোগীর বেশিরভাগ মাথা ব্যথা একদিক থেকে শুরু হয়ে পুরো মাথায় ছড়ায়।

সাধারণ অর্থে মাইগ্রেনের প্রধান লক্ষ্যই হলো মাথাব্যথা, সঠিক সময়ে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করা ঘুমের অনিয়মিত ও যথেষ্ট বিশ্রাম না নেওয়ার কারণে ও টি লক্ষ্য করা যায়।

মাইগ্রেনের লক্ষণ

সাধারণত মাথাব্যথা এবং মাইগ্রেনের মাথাব্যথা একই রকম না মাইগ্রেনের মাথা ব্যথা শুরু হলে শুধু মাথায় ব্যথা করে না সাথে চোখ-নাক আরো অনেক কিছুই আক্রান্ত হতে পারে। মাইগ্রেনের লক্ষণ, মাইগ্রেন এর অন্যতম লক্ষণ গুলো হল-

  • মাথা ঘোরা
  • মনোযোগহীনতা
  • চোখে ঝাপসা দেখা
  • প্রচুর মাথা ব্যথা
  • বমি বমি ভাব
  • ঘন ঘন হাই তোলা
  • আবহাওয়া সংবেদনশীল 
  • অনেক বেশি গরম বা অনেক বেশি ঠান্ডা অনুভব হওয়া ইত্যাদি

মাইগ্রেনের সমস্যা সাধারণত 15 থেকে 45 বছর বয়সে বেশি দেখা দিয়ে থাকে। তাদের মধ্যে পুরুষের থেকে নারীর তুলনাই সংখ্যায় বেশি। নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের কারণে বেশি দেখা দিয়ে থাকে। কিন্তু শিক্ষার্থী দের ক্ষেত্রে বেশি পড়াশোনা চাপ আর স্ট্রেস বিভিন্ন সমস্যার কারণে হতে পারে। কিন্তু ঘন ঘন বা তীব্রভাবে মাথাব্যথা তীব্র মাথা ব্যথার সাথে বমি বমি ভাব এগুলো দেখলে বুঝবেন এটি মাইগ্রেনের লক্ষণ।

মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায়

আমরা সকলেই মাইগ্রেনের এই অস্বস্তিকর অসহনীয় ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে চাই। এর জন্য আমরা কত ধরনের ঔষধ সেবন করে থাকি। কিন্তু সব সময় ঔষধে কাজ হয় না, যদি নিয়ম না মানা হয়। এজন্য মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর উপায় জানা প্রয়োজন। মাইগ্রেনের ব্যাথা পুরোপুরি নিরাময় হয় না তবে কিছু কিছু বিষয় মেনে চললে ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় যেমন-

  • প্রতিদিন ঠিক মতো নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো
  • ঘুমানোর সময় টেলিভিশন ফোন এগুলো দেখা থেকে বিরত থাকা
  • চকলেট, কফি, চিজ কৃত্রিম, চিনি, পুরানো পনির এগুলোর কারণেও মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়তে পারে তাইএ ধরনের খাবার থেকে বিরত থাকা
  • দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকা যাবে না, চেষ্টা করতে হবে ঘুম থেকে ওঠার এক ঘন্টা দু'ঘণ্টার মধ্যেই খেয়ে নেওয়া
  • পর্যাপ্ত পরিমাণের পানি খাওয়া, পিপাসা পাওয়ার আগেই পানি খাওয়া
  • নেশা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলেন, যেমন- ধূমপান, অ্যালকোহল
  • মানসিক ভাবে চাপ না নেওয়া, একাধিক কাজ একসাথে করে স্টেজ না হওয়া
  • কোন ধরনের খাবার খেলে আপনার সমস্যা হয় সেগুলো বাছাই করে সেগুলো থেকে দূরে থাকা
  • অনেক সময় মাইগ্রেনের সমস্যা হলে বেশি আলো চোখ সহ্য করতে পারে না সে ক্ষেত্রে চশমা দেওয়া হয়, সেটি ব্যবহার করলে রোগীর চোখ অনেক আরাম ফিল করে

মাইগ্রেনের ব্যথা কেন হয়

মাইগ্রেনের ব্যথায় অনেকে ভুগে থাকেন। ঠান্ডা লাগার কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ে তাই অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা থেকে সতর্ক থাকতে হবে। যেগুলোর কারণে মাইগ্রেন এর ব্যথা বাড়িয়ে দেয় যেমন-

  • অপর্যাপ্ত ঘুম
  • অতিরিক্ত আলোতে থাকা
  • শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেস
  • হরমোনাল ইস্যু
  • অতিরিক্ত টায়ার্ডনেস
  • ড্রিংকস বেশি পান করা
  • চকলেট, টফি, আইসক্রিম এগুলো বেশি পরিমাণে খাওয়া
  • দীর্ঘ সময় ধরে টেলিভিশন ফোন দেখা ইত্যাদি

মাইগ্রেনের চিকিৎসা

মাইগ্রেনে চিকিৎসা করার আগে দেখে নিতে হবে আসলেই মাইগ্রেন না শুধু মাথাব্যথা দীর্ঘ সময় কাজের চাপের কারণে বা টানা একনাগারে কোন কিছু নিয়ে ব্যস্ত থেকে ব্রেনে বেশি চাপ পড়লে সেই থেকে মাথাব্যথা হতেই পারে। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে এটি ঠিক হয়ে যাবে। এটি নিয়ে বেশি চিন্তা করার কোন কিছু নেই। কিন্তু মাইগ্রেনের ব্যথা হল বিশেষ এক ধরনের ব্যাথা যা এক সাইড থেকে শুরু হয়ে পুরা মাথা ছড়িয়ে যায়।

পুরো মাথা ব্যাথা হলে যেকোনো পেইনকিলার খাইলেই সেটি কাজ করে। কিন্তু মাইগ্রেনের প্রবলেম হলে যে কোন পেইনকিলার খাইলে সেটি ভালোভাবে কাজ করবে না। সে জন্য ডক্টরের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়া। তবে টানা একনাগাড়া অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়া যাবেনা, তাহলে সাইড ইফেক্ট করতে পারেন, যেমন- পেপটিক, আলসার, বমি ভাব ও বমি কিডনি সমস্যা হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SM TECHY এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url